এ্যাসাইনমেন্ট

সংকল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা, রত হয়ে নিজ নিজ কাজে

প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আশা করছি সবাই ভালো আছো। তোমাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছেসংকল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা, রত হয়ে নিজ নিজ কাজে শীর্ষক পংক্তির ভাব সম্প্রসারণ।

সংকল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা, রত হয়ে নিজ নিজ কাজে

সম্প্রসারিত ভাব : যেকোনো ভালো কাজের পূর্বশর্ত হচ্ছে সংকল্প করা। কর্তব্যকর্মে অগ্রসর হয়ে বাধাবিঘ্ন জয় করাই সফলতার উপায়। জীবনে সাফল্য লাভের জন্য দরকার বিপদ মোকাবেলা করা আর সংকল্পে দৃঢ় থাকা। বুদ্ধিমানেরা সংকল্প করে বর্তমানের ভাবনা ভাবেন। কেননা অতীত নিয়ে পড়ে থাকার কোন মানে হয় না। বরং তা মানুষের জীবনকে স্থবির ও জড় করে দেয়। তাছাড়া কেবল অতীত নিয়ে ভাবলে অনেক সময় ভবিষ্যতের পাথেয়ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। একজন মানুষকে বর্তমানের সর্বোত্তম ব্যবহারই সফল করে তুলতে পারে। তাইতো বুদ্ধিমানেরা সংকল্প করে বর্তমানের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে। পৃথিবীতে মানব জন্ম অত্যন্ত মূল্যবান।

অতীত জীবনের সুখ স্মৃতি রোমন্থন করে কারোর কাতর হওয়া উচিত নয়। সুখের প্রতিমা গড়ে অজানা ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করাও বোকামি। সময়ের কাজ সময়ে করা উচিত। ভবের সংসারে মানব জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এখানে মিথ্যা সুখের প্রতিমা গড়ে কোন লাভ নেই। অবশ্য মানব জীবনের উদ্দেশ্যও তা নয়। সংসারে বাস করতে হলে সংসারের দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে হবে। কেননা বৈরাগ্য সাধনে মানুষের মুক্তি নেই। মানুষের জীবন কেবল নিছক স্বপ্ন নয়। আর এ পৃথিবীকে কেবল স্বপ্ন ও মায়ার জগত বলা চলে না। অতীত সুখের দিন ও অনাগত ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানকে বাদ দিলে চলবে না।

বর্তমানেই বর্তমানের কাজ করে যেতে হবে। আমাদের জীবন যেন শৈবালের শিশির বিন্দুর মতো ক্ষণস্থায়ী। সুতরাং মানুষকে এ পৃথিবীতে সাহসী যোদ্ধার মতো সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হবে। আর বেঁচে থাকার জন্যই সংকল্প অনুসারে কাজ করতে হবে। বিপুলা পৃথিবীর জ্ঞানভান্ডার অসীম, কর্মযজ্ঞও অপরিসীম। কোন ব্যক্তি এই জ্ঞানভান্ডার নিঃশেষ করতে পারেনা অথবা কর্মযজ্ঞও সমাপ্ত করতে পারে না। ঠিক এই কারণে সকলেরই সময়ের মূল্য সম্বন্ধে সচেতন হওয়া উচিত।

Related Articles

শুধু বেশিদিন বেঁচে থাকাই জীবন নয়; বরং মানুষের কর্মসমষ্টিই হলো তার আসল জীবন। এবং এই কর্মের পর্বত আরোহনের প্রধান শেরপা হলো সময়ের যথাযথ প্রয়োগ। সংসারের প্রত্যেকের একটি নির্দিষ্ট কাজ আছে। নির্দিষ্ট সময়ে সেই কাজ না করলে অথবা অবহেলা করলে আমাদের কর্মবিমুখতা আসে।

আমাদের মধ্যে এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা সংসার বাঁধার পর মনে করে পৃথিবীতে তার সংগ্রাম করা একেবারেই বৃথা। কেননা এই স্ত্রী-পুত্র-কন্যা কেউ তার মৃত্যুর সময় সঙ্গে যাবে না। এ জন্য তাদের কাছে মানব জীবনটা রাত্রিকালের স্বপ্নের মতো মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই না। আবার কেউ কেউ আছেন যারা বাহ্যিক চাকচিক্যের লোভে পড়ে অন্ধকারে নিজের জীবনটা সপে দেয়। অনেকে আবার সময়ের কাজ সময়ে করে না। তারা জীবনে স্বপ্নও দেখে না, আকাঙ্ক্ষাও করে না।

মানব জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। তাই মিথ্যা সুখের কল্পনা করে মানব জীবনের দুঃখ বাড়ানো মানুষের উদ্দেশ্য হতে পারে না। জীবনে আকাঙ্ক্ষা করার মাধ্যমে সময়কে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে সাহসী যোদ্ধার মতো অভাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হবে। কেননা বৈরাগ্যে মুক্তি নেই, নেই মানব জীবনের আনন্দ। মহাজ্ঞানী ও মহাজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করলেও জীবনে অমর হওয়া যায়। যদিও কালের প্রবাহে মানুষের জীবন শৈবালের নীরের মতো ক্ষণস্থায়ী, তবুও স্বল্পকালিন এ জীবনে স্বপ্নদেখার মাধ্যমে সংগ্রাম করে টিকে থাকার মধ্যেই রয়েছে মানব জীবনের সার্থকতা।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button