অন্যান্য

২০২৩ সালে পবিত্র শবে মেরাজ কবে ও কত তারিখ? বিস্তারিত জানুন

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ (শনিবার) দিবাগত রাতে পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে। এবছর ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ থেকে ১৪৪৪ হিজরি সালের (আরবি) পবিত্র রজব মাস গণনা শুরু হয়। যদিও সকলেই জানি ইসলামে ইবাদত পূর্ণ রাতগুলো নির্ভর করে চাঁদ দেখার উপর। তাই বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করেছে পবিত্র শবে মেরাজ কবে হবে? আর আপনার এখান থেকে ২০২৩ সালে পবিত্র শবে মেরাজ কবে ও কত তারিখ? বিশেষত্ব ও গুরুত্ব জানুন।

প্রতিবছরের মত এ বছরেও ধর্মপ্রাণ মুসল্লী ভাই ও বোনেরা অপেক্ষা করছেন মাহে রমজানের জন্য। আর মাহে রমজান আসার পূর্বে শবে মেরাজ এবং  শবে বরাত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ১৫ দিন অন্তর অন্তর এই পবিত্র রাতগুলি উদযাপন হয়ে থাকে। তাই ২০২৩ সালে পবিত্র শবে বরাত কবে এবং কত তারিখ তা জানার জন্য অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লেই জেনে নিতে পারবেন।

শবে মেরাজ কি?

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নবুওয়াত লাভের একাদশ বর্ষের রজব মাসের ২৬ তারিখ দিনগত রাতে আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসেবে আরশে আজিমে আরোহণ করেন। তিনি আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টিজগতের সমস্ত কিছুর অপার রহস্য।

মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা ‘মিরাজ’। হযরত মুহাম্মদ ছাড়া অন্য কোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। এ মেরাজ রজনীতেই মানবজাতির শ্রেষ্ঠ ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। এজন্য মুসলিম ধর্মালম্বীদের কাছে মিরাজের তাৎপর্য অনেক গুরুত্ব বহন করে।

২০২৩ সালে পবিত্র শবে মেরাজ কবে ও কত তারিখ?

যেহেতু চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে সবে মেরাজের তারিখ নির্ধারণ করা হয় তাই বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন হতে যে তারিখ নির্ধারিত হয়েছে সে তারিখেই শবে মেয়েরা সংগঠিত হবে। কারণ বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রজব মাসের চাঁদ দেখতে পেয়েছেন।

আর  জানুয়ারির ২৪ তারিখ হতে ১৪৪৪ হিজরী সালের মাস গণনা শুরু হয়েছে। ফলে ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ দিবাগত রাতে  পবিত্র সবে মেরাজ পালন করা হবে। আর এই তারিখটি নির্ধারিত হয়েছে ২৩ শে জানুয়ারি বাইতুল মোকাররম মসজিদের সভাকক্ষ হতে। তারা জাতীয় চাঁদ দেখার কমিটির সভায় চাঁদ দেখার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।

সুতরাং ২০২৩ সালের পবিত্র শবে মেরাজ ১৮ই ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হবে।

পবিত্র শবে মেরাজের বিশেষত্ব ও গুরুত্ব জানুন।

ইসলামের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত পূর্ণ রাতগুলো ফজিলত পূর্ণ হয়ে থাকে। আর এই সকল রাতে এবাদত করলে অধিক পরিমাণে সভা অর্জন করা যায় এবং মহান আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার সুযোগ পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি একটি পবিত্র রাত হচ্ছে শবে মেরাজের রাত।

শব শব্দটি অর্থ হচ্ছে রাত। এই শব্দটি ফরাসি শব্দ হতে আগত হয়েছে। লাইলাতুল শব্দের অর্থ হচ্ছে রাত এবং মেরাজ শব্দের অর্থ হচ্ছে উর্ধ্ব গমন। অর্থাৎ সবে মেরাজকে আরবিতে লাইলাতুল মেরাজ বলা হয়ে থাকে। সুতরাং এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে উর্ধ্ব গমন রাত বা উর্ধ্ব গমনের রাত। ইসলামিক ইতিহাস অনুসারে জানা যায় হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২৬শে রজব মাসের দিবাগত রাতে ঊর্ধ্ব আকাশে ভ্রমণ করেন এবং মহান আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ লাভ করেন।

এই রাত সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস হচ্ছে- হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দিস গমন করেছেন। তারপর সেখান থেকে মহান আল্লাহতালার সান্নিধ্য লাভের জন্য আল্লাহতালা তাকে সাত আসমানের উত্তোলন করেন অর্থাৎ নিয়ে যান। এবং সেখানে হযরত মুহাম্মদ সাঃ বিভিন্ন নিদর্শন সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এবং সেখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে পূর্ববর্তী অনেক নবীদের সাক্ষাৎ হয়েছে।

এই সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার পৃথিবীতে ফিরে আসেন। এবং সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উপহার হিসেবে নিয়ে আসেন। মূলত সেই রাতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহতায়ালার সান্নিধ্যে গিয়েছিলেন এবং আল্লাহ তা’আলা মুসলিমদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দিয়েছেন। আর এর জন্যই মেরাজের রাতকে এত গুরুত্ব ও তাৎপর্য দেয়া হয়েছে।

তাই মুসলমানদের কাছে সবে মেরাজ অর্থাৎ লাইলাতুল মেরাজ হচ্ছে একটি মর্যাদা পূর্ণ বিশেষ রাত। আর এই রাতে মুসলমানরা নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে মূল্যবান রাত অতিবাহিত করেন এবং অনেকেই নফল রোজা রেখে থাকেন।

আশা করছি আপনারা এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মধ্যে দিয়ে ২০২৩ সালে পবিত্র শবে মেরাজ কবে ও কত তারিখ? বিশেষত্ব ও গুরুত্ব জানতে পেরেছেন। মহান আল্লাহ তা’আলা সকলকে সুপবিত্র শবে মেরাজ দিবাগত রাতে এবাদত করার তৌফিক দান করুক। এ ছাড়া আমরা আপনাদেরকে শবে মেরাজের বিশেষত্ব গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করেছি। আপনারা যদি শবে মেরাজ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত যে কোন তথ্য জানতে চান তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। জাযাকাল্লাহু খাইরান।

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button